Wednesday, October 23, 2013

রিসার্চ শুরু করবেন কীভাবে?

(শুরুতেই বলে রাখি, এই লেখাটার লক্ষ্য হলো স্নাতক পর্যায়ের বা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা, যারা গবেষণা সংক্রান্ত ব্যাপারে কাজ শুরু করতে চাচ্ছে, কিন্তু কীভাবে শুরু করতে হবে তা বুঝতে পারছেনা। অভিজ্ঞ গবেষকরা এখানে বলা অনেক কিছুই জানেন, তাই তাদের জন্য এটা না)

গবেষণা বা রিসার্চের মূল উদ্দেশ্য হলো নতুন কিছু বের করা, নতুন কোন কিছু উদ্ভাবন, বিশ্লেষণ, কিংবা সমাধান বের করা। তার মানে কিন্তু এই না যে, এই নতুন বের করা জিনিষটা যুগান্তকারী নোবেলজয়ী কিছু হতে হবে। বরং ছোট্ট কিছু দিয়েই শুরু করা যায়।

চীনা দার্শনিক লাও ঝে বলেছিলেন, A journey of a thousand miles begins with a single step, অর্থাৎ হাজার মাইলের যাত্রাও শুরু করতে হয় একটি পা ফেলেই। কাজেই গবেষণাকে মাউন্ট এভারেস্ট মনে না করে বরং মনে করুন ছোট্ট একটি ঢিবিতে চড়া, সেখান থেকে যাওয়া যাবে অন্য আরো গভীর কিছুতে।

গবেষণার জন্য প্রথমেই জানতে হবে সমস্যাটা কী। শুরুতে পরিস্কার ধারণা থাকার দরকার নাই। মোটামুটি বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা থাকাই যথেষ্ট। যেমন ধরা যাক, আপনি চান cloud computing নিয়ে কাজ করতে। ঠিক কোন সমস্যাটির সমাধান করতে চান, সেটা ঠিক পরে করুন, তার আগে এই বিষয় সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা ধারণা অর্জন করতে হবে।

সেই ধারণাটা কীভাবে অর্জন করা চলে? তার জন্য এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই কী কী কাজ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে জানতে হবে। Google Scholar কিংবা scopus বা pubmed এর মতো পাবলিকেশন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে কোনো বিষয়ের গবেষণাপত্র খুঁজে বের করতে পারেন। নতুনদের জন্য কাজে লাগবে সার্ভে পেপার জাতীয় কিছু, যেখানে ঐ বিষয়ের রিসার্চের একটা ওভারভিউ দেয়া আছে। যেমন, ক্লাউড কম্পিউটিং এর উপরে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া এট বার্কলে থেকে ২০০৯ সালে একটা সার্ভে পেপার বের করা হয়েছিলো, যেখানে এই সংক্রান্ত নানা বিষয়ের প্রাথমিক ধারণা দেয়া ছিলো।

এরকম সরাসরি কিছু না পেলে কী করা যায়? সমস্যা নাই, কোনো একটা পেপার নিয়ে তার related work সেকশনে চলে যান। ছোট আকারে হলেও সেখানে অন্যান্য কিছু পেপারের সম্পর্কে আলোচনা থাকবে। এভাবে কিছু পেপার বা সার্ভে ঘেঁটে এসব এলাকা সম্পর্কে ধারণা করে নিন।

প্রাথমি ধারণা অর্জনের পরে কী কী জিনিষ এখনো সমাধান হয়নি, বা আরো ভালোভাবে করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করুন। অথবা কোনো একটা পেপার কিংবা প্রচলিত সিস্টেমের পার্ফর্মেন্স নিয়ে কাজ করুন। অনেক সাবজেক্টে এক্সপেরিমেন্ট করতে অনেক যন্ত্রপাতি লাগে, সেসব ক্ষেত্রে আসলে শুরু করাটা কঠিন। তবে অনেক বিষয়ে যেমন কম্পিউটার বিজ্ঞানে বেশি কিছু লাগেনা, একটা কম্পিউটার হলেই চলে। কাজেই পার্ফর্মেন্স এনালাইসিস করেন, অথবা নতুন সিস্টেমের উপরে কাজ করে সেটাকে ডেভেলপ করে দেখান।

এভাবেই শুরু করে দিতে পারেন গবেষণা। আর আরেকটা পরামর্শ দেই, একটা ভালো দেখে বাঁধাই করা খাতা বা ডায়রি অবশ্যই কিনে নিবেন। আপনি কী কী করছেন, অবশ্যই সেখানে সেটা লিখে রাখবেন। আলাদা আলাদা খাতায় কিংবা ছুটা কাগজে কিছু লিখবেন না, অথবা নিজের স্মৃতির উপরে ভরসা করবেন না, সব কিছুই লিখে রাখবেন এক জায়গায়, এক খাতায়।


Comment 1 :
যারা গবেষণা সম্পর্কে আরো জানতে আগ্রহী, তারা The Craft of Research (Wayne C. Booth) বইটি পরে দেখতে পারেন।

যারা তাদের বয়স, লিঙ্গ বা অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য একটি প্রবন্ধের কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হল:
Berrou says their work is proof that it is not always necessary to know about theoretical limits to be able to reach them. "To recall a famous joke, at least in France," he says, "the simpleton didn't know the task was impossible, so he did it." [http://spectrum.ieee.org/computing/software/closing-in-on-the-perfect-code]

যারা গবেষণা এবং লেখা প্রকাশ করা (even in undergrad) নিয়ে চিন্তা করছেন, তারা এই লিংকটি দেখতে পারেন:
http://urca.msu.edu/publishing

তবে এ কথা অবশ্যই সত্য যে আপনাকে আপনার "basic tricks of the trade" জানতে হবে অথবা গবেষণা করার সময়ে শিখে নিতে হবে।

Source

No comments: